
বুদ্ধিমত্তা ও মানসিক দক্ষতা
দাবা খেলার ১৫টি উপকারিতা
যুক্তিসঙ্গতভাবে চিন্তা করার অভ্যাস গড়ে তোলে
প্রতিটি চাল দেওয়ার আগে বিশ্লেষণ করতে হয় – কেন এই চাল দেওয়া উচিত এবং এর সম্ভাব্য ফলাফল কী হতে পারে। নিয়মিত দাবা খেলার ফলে যুক্তিসঙ্গতভাবে চিন্তা করার দক্ষতা গড়ে ওঠে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে
দাবা খেলতে হলে আগের চালগুলো মনে রাখতে হয় এবং সেগুলোর ভিত্তিতে পরিকল্পনা করতে হয়। ফলে তাৎক্ষণিক স্মৃতিশক্তি বাড়ে এবং মস্তিষ্কের বিশ্লেষণ ক্ষমতা উন্নত হয়।
ধৈর্যশক্তি বাড়ায়
একটি দাবা ম্যাচ কয়েক মিনিট থেকে শুরু করে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। দীর্ঘ সময় মনোযোগ ধরে রাখতে হয়, যা ধৈর্যশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ায়
খেলার সময় অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়, যেখানে প্রচলিত কৌশল সবসময় কার্যকর নাও হতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে শিখলে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ে।
মনোযোগ বৃদ্ধি করে
এক মুহূর্তের অসাবধানতাও হারিয়ে দিতে পারে পুরো ম্যাচ। ফলে নিয়মিত দাবা খেলার ফলে মনোযোগ উন্নত হয়, যা অন্যান্য কাজেও কার্যকর ভূমিকা রাখে।
পরাজয় মেনে নেওয়ার মানসিকতা তৈরি করে
প্রতিটি ম্যাচে জয়ের সম্ভাবনা ৫০%। ফলে হার স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, যা বাস্তব জীবনেও পরাজয় মেনে নিয়ে নতুনভাবে এগিয়ে যাওয়ার মানসিকতা গড়ে তোলে।
ভুল থেকে শেখার অভ্যাস গড়ে তোলে
দাবার একটি ছোট ভুলই ম্যাচ হারানোর কারণ হতে পারে। তবে দক্ষ দাবাড়ুরা ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী ম্যাচে আরও ভালো খেলার চেষ্টা করেন।
সৃজনশীল চিন্তাশক্তি বাড়ায়
গবেষণায় দেখা গেছে, দাবা খেলায় অভ্যস্ত কিশোর-কিশোরীরা সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে ভালো ফলাফল করে।
চাপের মধ্যে চিন্তা করার দক্ষতা বৃদ্ধি করে
প্রতিটি চাল দেওয়ার সময় চাপের মধ্যে থেকেও যুক্তি ও কৌশলগত চিন্তা করতে হয়। ফলে বাস্তব জীবনেও কঠিন পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ে।
নতুন প্যাটার্ন শেখার ও মনে রাখার ক্ষমতা বাড়ায়
দাবা খেলার বিভিন্ন কৌশল যেমন কুইন’স গ্যামবিট, সিসিলিয়ান ডিফেন্স ইত্যাদি চিনতে ও প্রয়োগ করতে শিখতে হয়। যা বাস্তব জীবনেও নতুন তথ্য বা পরিস্থিতি দ্রুত বুঝতে সহায়তা করে।
কোনো কাজের ফলাফল চিন্তা করতে শেখায়
দাবায় প্রতিটি চাল দেওয়ার আগে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়ে ভাবতে হয়। এতে বাস্তব জীবনেও কোনো কাজের ফলাফল আগে থেকেই অনুমান করার ক্ষমতা গড়ে ওঠে।
অন্যের দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবার অভ্যাস গড়ে তোলে
দাবায় প্রতিপক্ষের পরিকল্পনা বুঝতে হলে তার অবস্থানে নিজেকে কল্পনা করতে হয়। যা সহমর্মিতা ও কৌশলগত চিন্তাভাবনার দক্ষতা বৃদ্ধি করে।
পরিকল্পনার দক্ষতা বাড়ায়
একটি ম্যাচ জিততে হলে শুরু থেকেই সঠিক পরিকল্পনা করা জরুরি। পাশাপাশি, পরিকল্পনা ব্যর্থ হলে দ্রুত বিকল্প কৌশল নির্ধারণ করতেও হয়।
দূরদৃষ্টি বৃদ্ধি করে
দাবার ভালো খেলোয়াড়রা কয়েক চাল আগেই সম্ভাব্য পরিস্থিতি অনুমান করতে পারেন। এটি বাস্তব জীবনেও দূরদৃষ্টি ও ভবিষ্যদ্বাণীমূলক চিন্তার ক্ষমতা বাড়ায়।
মস্তিষ্কের উভয় অংশের সমান ব্যায়াম হয়
গবেষণায় দেখা গেছে, দাবাড়ুদের মস্তিষ্কের দুই অংশই সমানভাবে সক্রিয় থাকে, যা বুদ্ধিবৃত্তিক দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।
শেষ কথা
দাবা শুধু একটি খেলা নয়, এটি বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়নের শক্তিশালী মাধ্যম। নিয়মিত দাবা খেলার মাধ্যমে যুক্তিসঙ্গত চিন্তাভাবনা, স্মৃতিশক্তি, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা ও ধৈর্যশক্তি বাড়ে, যা বাস্তব জীবনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।